গহ্বর গাজী ---- দ্বৈপায়ন দত্ত

 

।। গহ্বর গাজী ।।

---- দ্বৈপায়ন দত্ত

বনপাসসহ বনপাশে নাও পরে ভাসে

সাথে হাজার কাঁটার দন;

বিদ্যার জলে মাছ নাহি মেলে

এবে শেষ হবে গন 

জীর্ণ ঘর, রুগ্‌ণা ঘরনি 

পথ্য নাহি পায়;

আড়ৎদারের তাড়া, তার চেয়েও বাড়া

যুবতি কন্যার দায়।

পড়িল সহসা টান, ছিঁড়িল বুঝি দন! 

নৌকা উঠিল দুলে;

তাড়া করে ভয়, যদি অন্য কিছু হয়!

প্রাণ বুঝি গেল অকালে!

শঙ্কা হল দূর, বহুদিন পর

সেরা ভেটকি ভাঙন দেখে;

নৌকার খোলে চুঁয়া জল ফেলে

থরে থরে সাজিয়ে রাখে।

মন ক্যানিং-এ যায় গোবিন্দের কাঁটায়  

সেরা দাম যাবে পাওয়া;

হালকা হবে দাদনভার, ওষুধ হবে সালেহার, 

রাবিয়ার হবে বিয়া ।

ছবিটা মুহূর্তে  মিলায় চকিতে হইলে উদয় 

বন্দুকধারী বনরক্ষী (?) দুটি;

দীনের দেনা দায় দীনকে কি ছাড়িতে চায়?

মুক্তির দুরাশা হল মাটি।

যমদূতদ্বয় বজ্রসম কয়,

কোন শুয়োরের বাচ্চারে তুই! 

থাকিস কোথায়?  কি নাম তোর?

আজ্ঞে হুজুর,  মুই

গহ্বর গাজী,   

পিতা আমজাদ, নিবাস নগেনাবাদ।

বড্ড পাজি!

পাওনাটা (?) দেবে কেটা ?  পাষাণ! পামর!

যা আছে সেরা খোলেতে ভরা

সবকটা তোল স্পীডবোটে;

চলছে এবার বড় সাহেবের সফর

খেয়ে খুশি হবে বটে।

অক্ষম হুজুর, পেয়েছি বহুগন পর,

করিবনা হাতছাড়া; 

ভয় নেই প্রাণে? বেটা মরবি জানে!

পাবিনে কভু ছাড়া।

চকিতে কাঁচা বুনো ফল, তাজা হরিণের ছাল,

নাও-এ দিল ছুঁড়ি;

সবমাছ নিল কেড়ে, অন্নজল দিল ছুঁড়ে,

কোমরে বাঁধিল দড়ি

স্পীডবোট যতো ছোটে বন্দির ততো জোটে

কিল চড় লাথি; 

উদ্ধার হল কত আপনজন ছিল যতো

মা মাসি জ্ঞাতি  

দুরুদুরু বুকে থুরুথুরু মুখে সাহসে করিয়া ভর

কহিল গহ্বর, মাছধরা মোর অধিকার!

তবে, অপরাধ ক?

সাহেব গেল ক্ষেপে, হস্তিসমদেহ কেঁপে   

মারিল সজোরে লাথি;

কঁকায়ে উঠিল গহ্বর লুটায়ে পড়িল ভূমির পর

ধরিয়া দুহাতে ছাতি।

সাহেব গরজায়, মুখের পরে কয়!

নেমকহারাম! বনের ফসল নিবি,

দিবি বনদারে (?) ফাঁকি?

তাং- ০১-১২-২০১৪


Comments

Popular posts from this blog

Unchecked avarice and abuse of power push Sundarban fishers to the brink

অনিয়ন্ত্রিত লোভ ও ক্ষমতার অপব্যবহারে কোণঠাসা সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা ------- মিলন দাস

আজ আমি শুধু তোমাদের মেয়ে ---- দ্বৈপায়ন দত্ত